Total Pageviews

Tuesday, December 13, 2016

বিজয় দিবস,সংখ্যালঘু নির্যাতন ও এদেশের স্বার্বভৌমত্বের সাতকাহন।

চিত্রঃ বিজয়ের আনন্দে তারুণ্যের জয়গান।

আর মাত্র কয়েক প্রহর বাদেই বিজয়ের আনন্দে সমগ্র বাংলাদেশ স্বমহিমায় প্রজ্বলিত হবে। ডিসেম্বর মাস আমাদের বিজয়ের মাস কিন্তু বিজয়ের আনন্দ আমরা কতটুকু একে অন্যের সাথে ভাগাভাগি করতে পারি? যে দেশ নিয়ে আমাদের গর্ব করার মত অনেক কিছুই ছিল সেই দেশ আজ শকুনদের ভিড়ে জর্জরিত। এদেশে মানুষ আজ সর্বদায় আতঙ্কের মধ্যে রাত্রি যাপন করে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষগুলোর অবস্থা আরও করুন। প্রতি রাতে মা-বোনরা ধর্ষণের শিকার তো হচ্ছেই, সাথে সাথে তাদের জীবন ও যানমালেরও কোন নিরাপত্তা নেই। এদেশের সুশীল সমাজ ও পত্র পত্রিকাগুলো মাঝে মাঝে একটু লেখালেখি করলেও কিছুদিন পরে তা সকলের অগোচরে চলে যায়। আমরা রহিঙ্গাদের নিয়ে খুব মাতামাতি করি,তাদের অত্যাচারের কাহিনী আমাদের কষ্টের কারন হয়ে দাঁড়ায় কিন্তু এদেশের বৈধ নাগরিক যারা এই দেশকে হায়েনার কবল থেকে মুক্ত করতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল তাদের অত্যাচারিত হওয়ার কাহিনী আমাদেরকে মনে মনে আনন্দ দেয়। এর প্রধান কারন হচ্ছে ধর্ম। কারন এদেশের সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও সংখ্যাগুরুদের ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পূর্ণ আলাদা। শুধু মাত্র ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে মানুষকে বিবেচনা করে নিজেদের মনুষ্যত্বকে বিসর্জন দেওয়ার মধ্যে বাস্তবিক কতটুকু যৌক্তিকতা রয়েছে সেটা আমার বোধগম্য নয়। এদেশ থেকে সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত হয়ে ভারতে গমন করবে আবার কিছু দিন পর ঐ দেশের সংখ্যালঘুরা অত্যাচারিত হয়ে পাকিস্তান বা বাংলাদেশে আশ্রয় নেবে; হয়তো যুগ যুগ ধরে এভাবেই চলতে থাকবে কিন্তু এভাবে চললে কার্যত কোন সুখ বা আত্মতৃপ্তি লাভ করা সম্ভব হবে কি? না এতে কোন সুখ নেই,নেই কোন আনন্দ। এতে শুধু বহিঃবিশ্বের কাছে আামদের সার্বভৌমত্বই বিপন্ন হবে,পুরনো শকুন গুলো জাতির পতাকা পুনরায় খামছে ধরার সাহসিকতা অর্জন করবে।
#‌লি‌খে‌ছেন~প‌বিত্র ঘোষ।

ট্রাম্প তার উত্তরসূরির কাছ থেকে ক্ষমতা ঠিকমত বুঝে নিতে পারবেন কি?

চিত্রঃ একই ঘোড়ায় ডোনাল্ট ট্রাম্প ও পুতিন।

ডোনাল্ট ট্রাম্প আমাদের খালাতো ভাইও না আবার মামাতো ভাই না, কিন্তু বিশ্ব রাজনীতিতে আমেরিকার একচ্ছত্র আধিপত্তের কারনে ডোনাল্ট ট্রাম্প অবশ্যই আমাদের মাথা ব্যাথার কারন। ডোনাল্ট ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে ভূরাজনীতির প্রেক্ষাপটই বদলে যেতে পারে। নির্বাচনে জয়লাভের জন্য তিনি বিভিন্ন ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য করে নিজেকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং পরিশেষে সকল সমালোচকের মুখে একরাশ চুনকালি লেপন করে নির্বাচনে কাঙ্খিত বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হন। অবশ্য এখন দেখা যাচ্ছে তিনি তার বিতর্কিত স্টাইল থেকে সরে এসে অনেকটাই নমনীয় আচারন করছেন। এ থেকেই অতি সহজে বোঝা যায় তিনি রহস্যের বেড়াজালে ঘেরা একটা অতিকায়  হস্তি স্বরূপ। এই রহস্যময়তার অন্তরালে তিনি আসলে কিরূপ মূর্তি ধারন করতে চলেছেন সেটা একমাত্র বিধাতা এবং স্বয়ং তিনিই জানেন বৈকি। কারন কামার যা গড়ে সেটি কিন্তু মনে মনেই গড়ে। ডোনাল্ট ট্রাম্পের সমালোচকরা অবশ্য তাদের সমালোচনা থেকে এখনও বিন্দু মাত্র বেরিয়ে আসতে পারেনি। সমালোচকরা তো সমালোচনা করবেই এটাই স্বাভাবিক। অনেকে এও বলছেন ট্রাম্প তার উত্তরসূরির কাছ থেকে ক্ষমতা ঠিকমত বুঝে নিতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। এ ব্যাপারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অবশ্য একটি চমৎকার মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন ট্রাম্প একজন ব্যাবসায়ী মানুষ এবং তিনি এক্ষেত্রে যথেষ্ট সফল সুতারাং তিনি খুব তাড়াতাড়িই সবকিছু বুঝে নিতে সক্ষম হবেন। এ ব্যাপারে কিন্তু আমি পুরোপুরি একমত;আপনারা কি বলেন?
#‌লি‌খে‌ছেন~প‌বিত্র ঘোষ।

Thursday, December 8, 2016

পৃথিবীর সৃষ্টি,স্থীতি,বিনাস সকল কিছুই ”ওঁ”এর মধ্যে নিহীত।

চিত্রঃ ওঁ বা ওঁ-কার বা প্রনব বা ত্র‌্যক্ষর যা হিন্দু ধর্মের পবিত্রতম প্রতীক।

হিন্দুরা বিশ্বাস করে ঈশ্বর সাকার আবার নিরাকার,তাই হিন্দুরা ঈশ্বরকে পাওয়ার জন্য বা তার কৃপা লাভের জন্য দুটি উপায় অবলম্বন করে আরাধনা করে থাকে। এক হচ্ছে ঈশ্বরের সাকার রূপ, আরেকটি হচ্ছে ঈশ্বর নিরাকার যার লেখ্য রূপ ”ওঁ”হিসেবে বিবেচ্য। এই ”ওঁ”(সংস্কৃত.অ+উ+ম) হচ্ছে হিন্দুদের মূল প্রতিকৃতি,কারন হিন্দুরা বিশ্বাস করে যে,”ওঁ”এর মধ্যেই পৃথিবীর সৃষ্টি, স্থীতি, বিনাশ সকল কিছুই নিহীত। যদি তাই হয় তাহলে ”ওঁ” এর মধ্যে মহাবিশ্বের সকল শক্তিই বিদ্যমান যেটাকে আমরা ঈশ্বর বলি। এই ”ওঁ” বা ঈশ্বর হচ্ছে নিরাকার কিন্তু আমরা যখন ঈশ্বরকে সাকার রূপে আরাধনা করি তখন ”ওঁ” এর মধ্যে যে শক্তিগুলো আছে সেই শক্তিগুলোকে আলাদা আলাদা করে ফেলি। যেমন আমরা যখন শিবের উপাসনা করি তখন বলি, ওঁ নমঃ শিবায় আবার যখন বিষ্ণুর উপাসনা করি তখন বলি ওঁ শ্রীবিষ্ণু আর্থাৎ শিব বা ব্ষ্ণিু হচ্ছে ঈশ্বরের এক একটি পৃথক অংশ, যাদের উপাসনা করলে পৃথক পৃথক ফল লাভ করা সম্ভব। একারনে শিব বা বিষ্ণুর নামের আগে ”ওঁ” শব্দটি যুক্ত করা হয়েছে। এরূপ হওয়ার কারন হচ্ছে আমরা যখন ঈশ্বরকে সাকাররূপে আরাধনা করব তখন তার একটা ছবি বা প্রতিকৃতির প্রয়োজন হয়,যেটাকে অবলম্বন করে আমরা পরমাত্মার সাথে যোগসূত্র স্থাপন করার চেষ্টা করি। যেকোন দেবতার নামের আগে ”ওঁ” কথাটি যুক্ত করার অর্থ হচ্ছে ঐ সকল দেবতার উৎপত্তির উৎস হচ্ছে ”ওঁ”। যেমন, ওঁ নমঃ শিবায় বা ওঁ শ্রীবিষ্ণু কথাটি বলার কারন হচ্ছে ”ওঁ” থেকে শিব আসছে আবার ঐ ”ওঁ” থেকেই বিষ্ণু আবির্ভূত হচ্ছেন অর্থাৎ ঐ নিরাকার শক্তি হতেই সকল কিছুর আবির্ভাব হচ্ছে। তার মানে এটাই বোঝায় যে আমরা যে যারই উপসনা করছি না কেন বুঝতে হবে যে, আমরা সেই স্বয়ং ভগবান বা ওঁ বা ঈশ্বরেরই উপাসনা করছি।
#‌লি‌খে‌ছেন~প‌বিত্র ঘোষ।

Monday, December 5, 2016

বড়ুচন্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন একটি সাহিত্যমাত্র,এর কোন বাস্তব ভিত্তি নেই!

মধ্যযুগের জনপ্রিয় সাহিত্য শ্রী-কৃষ্ণকীর্তন কাব্যে বড়ু চন্ডীদাস শ্রীকৃষ্ণের যতটা না গুনগান করেছেন তার থেকে বেশি তাকে একজন ভন্ড ও লম্পট হিসেবে উপস্থাপন করার হীন অপচেষ্টা চালিয়েছেন। যেটা সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক ও অমানবিক এবং বস্তুত এতে বাস্তবতার কোন মিল আছে বলে আমার মনে হয় না। হতে পারে তিনি কোন সস্থা খ্যাতি পাওয়ার জন্য এরকম একটা স্পর্শকাতর বিষয়কে কল্পনায় রূপ দিয়েছেন। মধ্যযুগে শ্রীকৃষ্ণ সকলের কাছে বিশেষ করে হিন্দু সমাজের কাছে অত্যাধিক জনপ্রিয় ছিলেন বলে তিনি তাকে কেন্দ্র করে এরকম একটি সাহিত্য রচনা করে থাকতে পারেন বলে মনে করি। আমি আমার আগের আর্টিকেলে বোঝানোর চেষ্টা করেছি প্রকৃতপক্ষে শ্রীকৃষ্ণের সাথে রাধার সম্পর্কটা কেমন ছিল। রাধা শুধুই শ্রীকৃষ্ণের একজন একনিষ্ট ভক্ত ছিলেন। আর ভক্ত সবসময় চাই পরমাত্মায় বিলিন হতে। রাধা সম্ভবত সেই প্রচেষ্টায় করেছিলেন যেটাকে আমরা পরকিয়ার মত নোংরা একটা সম্পর্ক বলে চালিয়ে দিচ্ছি। আমরা হয়তো জানি যে শিল্প ও সাহিত্যের কোন ধর্ম হয় না। সাহিত্য এগিয়ে চলে তার নিজস্ব গতিতে। একজন লেখক বা সাহিত্যিক তার সাহিত্যকে কল্পনাশক্তির মাধ্যমে কোথায় নিয়ে যাবেন সেটা কেবলই তার ইচ্ছার উপরই নির্ভর করে। তাই এই সাহিত্যটি কখনই শ্রীকৃষ্ণের বাস্তব চরিত্র হিসেবে গ্রহনীয় হতে পারে না। উদাহরন হিসেবে বলা যেতে পারে মাইকেল মধুসূদন দত্তের মেঘনাথ বধ কাব্যের বিষয়টা। তিনি তার কাব্যে রামকে খলনায়ক বানিয়ে মেঘনাথকে নায়ক হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন কিন্তু প্রকৃত ঘটনা কিন্তু আমাদের সকলেই জানা। বড়ুচন্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটিও এরকম কিছু হতে পারে। গীতা হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের মুখনিসৃত বাণী অথচ এখানেও রাধাকৃষ্ণের এই তথাকথিত লীলা সম্পর্কিত তেমন কোন তথ্যই উপস্থাপন করা হয়নি। স্বয়ং শ্রীমদভগবদগীতাই যেখানে রাধা কৃষ্ণের প্রেম লীলা সম্পর্কে তেমন কিছুই বলছে না সেখানে বড়ু চন্ডীদাসের এই সাহিত্যকে কিভাবে আমরা বিশ্বাস করতে পারি? আপনাদের কছে আমার প্রশ্ন রইল।
#‌লি‌খে‌ছেন~প‌বিত্র ঘোষ।

Friday, December 2, 2016

আপনি জানেন কি রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা প্রকৃৃতপক্ষে কেমন ছিল?

চিত্রঃ রাধা ও কৃষ্ণের তথাকথিত প্রেম লীলা।

রাধা কৃষ্ণের প্রেম লীলা নিয়ে আমাদের মধ্যে যথেষ্ট মতভেদ রয়েছে। শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে একেক জন একেক রকম মন্তব্য করে থাকেন। কেউ বলেন তার ষোল শত স্ত্রী আবার কেউ বলেন লুকিয়ে লুকিয়ে মেয়েদের শাড়ি কাপড় চুরি করা ও তাদের স্নান দেখা ছাড়া আর কোন কাজই ছিল না তার। এছাড়া সে অন্যের স্ত্রীর সাথে পরকীয়ায়ও জড়িত ছিল ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু আসলে এগুলো কি প্রকৃত ঘটনা? না এগুলোর আসলে কোনটিরই বাস্তব ভিত্তি নেই। আমরা কেউই সঠিক বিষয়টা জানি না বা জানার চেষ্টাও করি না। একেকজন লেখক শ্রীকৃষ্ণের লীলাকে একেক ভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন শুধুমাত্র সস্তা খ্যাতি পাওয়ার জন্য। যেমন অনেক লেখক তাদের গ্রন্থে শ্রীকৃষ্ণকে লম্পট বলে আখ্যায়িত করেছেন, এটা অবশ্য তাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা সুতরাং তারা এটা বলতে পারেন। এছাড়া তারা সাহিত্যিক আর আমরা জানি সাহিত্যের কোন ধর্ম নেই। সাহিত্য এগিয়ে চলে তার নিজস্ব গতিতে। প্রবাদে আছে গল্পে গরু গাছে ওঠে। আর গল্পে যদি গরু গাছে ওঠে তাহলে একজন গল্পকারের কাছে শ্রীকৃষ্ণ লম্পট ও নারীলোভীও হতে পারেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ধর্মের ক্ষেত্রে এগুলো সঠিক নয়। ধর্মীয় দৃষ্টিতে রাধার সাথে কৃষ্ণের সম্পর্ক হল ভক্ত ও ভগবানের সম্পর্ক, জীব আত্মার সাথে পরমাত্মার মিলনের সম্পর্ক অর্থাৎ জীব সবসমyয় চায় পরমাত্মা অর্থাৎ ঈশ্বরের সাথে মিলিত হতে কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারনে জীব সেটা পারে না। আর এই সীমাবদ্ধতা হল ভক্তি ও প্রেমের অভাব। হৃদয়ে ভক্তি ও প্রেম জাগ্রত করতে হলে চোখের জলের প্রয়োজন হয়,কোন কিছু পাওয়ার জন্য ব্যকুল হতে হয়। রাধার এই ব্যকুলতা হচ্ছে ঈশ্বরকে পাওয়ার জন্য তার হৃদয়ে সৃষ্ট ব্যকুলতা যেটাকে আমরা তথাকথিত প্রেম বলে চালিয়ে দিচ্ছি।
#‌লি‌খে‌ছেন~প‌বিত্র ঘোষ।