Total Pageviews

Monday, December 5, 2016

বড়ুচন্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন একটি সাহিত্যমাত্র,এর কোন বাস্তব ভিত্তি নেই!

মধ্যযুগের জনপ্রিয় সাহিত্য শ্রী-কৃষ্ণকীর্তন কাব্যে বড়ু চন্ডীদাস শ্রীকৃষ্ণের যতটা না গুনগান করেছেন তার থেকে বেশি তাকে একজন ভন্ড ও লম্পট হিসেবে উপস্থাপন করার হীন অপচেষ্টা চালিয়েছেন। যেটা সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক ও অমানবিক এবং বস্তুত এতে বাস্তবতার কোন মিল আছে বলে আমার মনে হয় না। হতে পারে তিনি কোন সস্থা খ্যাতি পাওয়ার জন্য এরকম একটা স্পর্শকাতর বিষয়কে কল্পনায় রূপ দিয়েছেন। মধ্যযুগে শ্রীকৃষ্ণ সকলের কাছে বিশেষ করে হিন্দু সমাজের কাছে অত্যাধিক জনপ্রিয় ছিলেন বলে তিনি তাকে কেন্দ্র করে এরকম একটি সাহিত্য রচনা করে থাকতে পারেন বলে মনে করি। আমি আমার আগের আর্টিকেলে বোঝানোর চেষ্টা করেছি প্রকৃতপক্ষে শ্রীকৃষ্ণের সাথে রাধার সম্পর্কটা কেমন ছিল। রাধা শুধুই শ্রীকৃষ্ণের একজন একনিষ্ট ভক্ত ছিলেন। আর ভক্ত সবসময় চাই পরমাত্মায় বিলিন হতে। রাধা সম্ভবত সেই প্রচেষ্টায় করেছিলেন যেটাকে আমরা পরকিয়ার মত নোংরা একটা সম্পর্ক বলে চালিয়ে দিচ্ছি। আমরা হয়তো জানি যে শিল্প ও সাহিত্যের কোন ধর্ম হয় না। সাহিত্য এগিয়ে চলে তার নিজস্ব গতিতে। একজন লেখক বা সাহিত্যিক তার সাহিত্যকে কল্পনাশক্তির মাধ্যমে কোথায় নিয়ে যাবেন সেটা কেবলই তার ইচ্ছার উপরই নির্ভর করে। তাই এই সাহিত্যটি কখনই শ্রীকৃষ্ণের বাস্তব চরিত্র হিসেবে গ্রহনীয় হতে পারে না। উদাহরন হিসেবে বলা যেতে পারে মাইকেল মধুসূদন দত্তের মেঘনাথ বধ কাব্যের বিষয়টা। তিনি তার কাব্যে রামকে খলনায়ক বানিয়ে মেঘনাথকে নায়ক হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন কিন্তু প্রকৃত ঘটনা কিন্তু আমাদের সকলেই জানা। বড়ুচন্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যটিও এরকম কিছু হতে পারে। গীতা হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের মুখনিসৃত বাণী অথচ এখানেও রাধাকৃষ্ণের এই তথাকথিত লীলা সম্পর্কিত তেমন কোন তথ্যই উপস্থাপন করা হয়নি। স্বয়ং শ্রীমদভগবদগীতাই যেখানে রাধা কৃষ্ণের প্রেম লীলা সম্পর্কে তেমন কিছুই বলছে না সেখানে বড়ু চন্ডীদাসের এই সাহিত্যকে কিভাবে আমরা বিশ্বাস করতে পারি? আপনাদের কছে আমার প্রশ্ন রইল।
#‌লি‌খে‌ছেন~প‌বিত্র ঘোষ।

No comments:

Post a Comment