Total Pageviews

Thursday, May 26, 2016

হিন্দুরা ধর্ম নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় না।

কোন হিন্দু ধর্ম নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায় না। এটা তাদেরকে হেনস্হা করার একটা হীন তরিক। বাংলাদেশে ১৩.৫ কোটি মুসলিম বাস করে আর ভারতে আছে পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭.৫ কোটি। কখনও কি কেউ  শুনেছে ভারত থেকে একটি মুসলিম অত্যাচারিত হয়ে পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশে এসেছে? এমন নজির কিন্তু নেই কারন হিন্দুরা একটি ধর্মীয় সহনশীল জাতি। শিক্ষক শ্যামল কান্তি বাবুকে নিয়ে কিছু বলতে গেলে বলতে হয় তিনি কেবল তীব্র সাম্প্রদায়িকতার শিকার। কারন ঐ স্কুলের ইসলাম শিক্ষার শিক্ষক স্বয়ং বলেছেন তিনি এত বছর ঐ স্কুলে চাকরি করছেন,তাকে তিনি ভালভাবে চেনেন, তিনি ধর্ম নিয়ে কোন কটুক্তি করতে পারেন না। যে ছাত্রকে তিনি প্রহার করেছেন সেও ব্যাপারটা নিয়ে তেমন কিছু বলতে পারেনি। এছাড়াও সাংবাদিকরা বলছেন, এলাকাবাসির কাছ থেকেও ঐ অভিযোগের কোন সত্যতা মেলেনি। তবে কেন এই হীন প্রয়াস? এভাবে চলতে থাকলে আমরা সংখ্যালঘুরা কোথায় যাব? এই অনাচার তোমরা বন্ধ কর। এটা তোমাদের যেমন জন্মভূমি তেমনি আমাদেরও। এদেশের মাটির অধিকার যেমন তোমাদের তেমনি আমাদেরও। আজ মিয়ানমারে যারা সংখ্যালঘু তারা বাংলাদেশে সংখ্যাগুরু। যারা এদেশে লঘু তারা সীমানা পেরোলেই গুরু। এই লঘু গুরু কখনই শান্তি এনে দিতে পারবে না। মানুষকে ধর্ম দিয়ে নয় মানবিক দিক দিয়ে বিচার করতে হবে। তাহলেই কেবল দেশ ধর্ম জাতি সব টিকে থাকবে। তা না হলে সব বিলুপ্ত হবে। তোমরা, আমি, আমরা সবাই। আশা করি তোমাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।

Wednesday, May 25, 2016

আমাকে একজন সংখ্যালঘু নয় একজন সাচ্চা দেশপ্রেমিক হিসেবে বাঁচার অধিকার দিন।

আমি খুব বেশি কিছু লিখি না কারন আমি এদেশের সুশীল সমাজের কাছে একজন সংখ্যালঘু এবং মৌলবাদীদদের কাছে বড় সড় উৎকৃষ্ট মানের পেশীবহুল দুর্বল চিত্তের মালু (মালাউন) ,কোনভাবেই এদেশের নাগরিক নই। আমার প্রতিবাদের ভাষা নেই,কোন মৌলিক অধিকার নেই,আছে শুধু করুনা। হ্যাঁ সত্যিই তো আমি করুনা নির্ভর, দেশের মানুষ আমাকে করুনা করে বলেই তো আমি আজও বেঁচে আছি,নিজের হাতে রোজগার করে দুমুঠো খেতে পারছি,এদেশের ফুল-ফল-জল-প্রকৃতির শোভা আজও হয়তো আস্বাদন করতে পারছি। আমার কলেজের এক শ্রদ্ধেয় বড় ভাই আমাকে একদিন বলল- "এখন তো তোদের দিন ভাই, তোরাই তো শান্তিতে আছিস,এক পা বাংলাদেশে আরেক পা ইন্ডিয়াতে,একপাশে হাসিনা অন্যপাশে মোদি,তোদেরই তো গদি বস তোদেরই তো গদি"। কিন্তু কই এদেশে যখন সংখ্যালঘুদের উপর নির্বিচার হামলা হয়,তাদের সম্পত্তি লুন্ঠিত হয়,মা-বোনরা ধর্ষিত হয় তখন কেউ তো তাদের পাশে এসে দাঁড়ায় না। তাদের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তার সু-ব্যবস্হা করে না। তখন না আসে হাসু আপু না আসে মোদি বাবু। হয়তো সুশীল সমাজের কয়েকদিন একটু প্রতিক্রিয়া,রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মিডিয়ার সামনে একটু হ্যান করেঙ্গা ত্যান করেঙ্গা কিন্তু কদিন পরেই সবাই তাইরে নাইরে না। এভাবে আর কত দিন? একসময় আমার পূর্বপুরুষরা এদেশকে হায়েনার কবল থেকে রক্ষা করার জন্য তোমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিল অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিল। তখন তোমাদের দাবি ছিল স্বাধীন সার্বভৌম একটা মানচিত্রের কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় তোমাদের আকাঙ্খার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে এবং অনেক মুক্তিযোদ্ধাও হয়তো রাজাকার হয়েছে। এখন তোমরা চাইছো এদেশ থেকে কাফের বিদায় করে একটি ইসলামিক জঙ্গী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে। আমি জানি না সেটা পারবে কিনা কিন্তু পারলেও তোমরা কতটা সুখে থাকবে? সেটাই আমার প্রশ্ন। হয়তো পকিস্তান,আফগানিস্তান এর মত সুখী হবে! কিন্তু আমি? আমার কি হবে? আমি তো আমার জন্মভূমিকে আমার প্রাণের চেয়েও ভালবাসি,এদেশের মাটি,বাতাস,জল আমার খুব প্রিয়,আমি এদেশে মুক্তভাবে বাঁচতে চাই,স্বাধীনভাবে কথা বলতে চাই। আমি তো নির্বাক গনতন্ত্র; আমাকে অধিকার দেবে কে? তাই আমার কলুষিত প্রাণের একটাই দাবী -আমাকে অধিকার দিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; আমাকে একজন সংখ্যালঘু নয় একজন সাচ্চা দেশপ্রেমিক হিসেবে বাঁচার অধিকার দিন

সংখ্যালঘু নির্যাতন আমাদের লজ্বা।

প্রাগ-ঐতিহাসিক কাল থেকেই বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত আমরা। আজ জাতি এক নিদারূন ক্রান্তিকাল অতিক্রমরত। খুন,ধর্ষণ,রাহাজানি,সংখ্যালঘু নির্যাতন এসবই যেন এক নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা। তবে এক্ষেত্রে মূখ্য বিষয় হল সংখ্যালঘু নির্যাতন। সবকিছু মোটামুটি রোধ করা গেলেও কোন সরকারের পক্ষেই এটা আর খুব বেশি রোধ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। আমরা সংখ্যালঘুরাই সবথেকে বেশি দেশপ্রেমিক এবং ধর্মীয় সহনশীল বলে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি। একারনেই হয়তো এত অমানবিক অত্যাচার মেনে নিয়েও এদেশের মাটি কামড়ে আমরা আজও একটা স্বর্ণালী দিনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছি। আমরা একসময় ৪৬ শতাংশ ছিলাম,সেখান থেকে আছি আর মাত্র ৬ শতাংশ। আমরা এই ৬ শতাংশ এদেশের কাছে খুব বেশী কিছু চায় না শুধু একটু শান্তি ছাড়া। আজ অনেক দেরিতে হলেও একটা বিচার সম্পন্ন হল কিন্তু এই বিচারে খুব বেশি খুশি হতে পারছি না পুরনো দিনগুলোর কথা ভেবে। এক নিজামীর ফাঁসি হয়তো হয়েছে কিন্তু সাথে সাথে শত শত সংখ্যালঘুর কপাল পুড়েছে। পত্রিকা খুললেই হয়ত দেখতে পাব অমুক পাড়ায় নিজামীর ফাঁসিকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা। এ লজ্বা কার? জাতির বিবেকের কাছে আমার প্রশ্ন রইল।

ঘাতকদের হাত থেকে রক্ষা করুন দেশ।

বর্তমান সময় আর ১৯৭১ সালের মধ্যে একটা অসাধারন মিল খুজে পাচ্ছি। ১৯৭১ সালে এদেশকে পঙ্গু করার জন্য এদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল আর এখন বেছে বেছে প্রগতিশীল তরুনদের হত্যা করা হচ্ছে। আপনার কি মনে হচ্ছে না এরা এদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে? আমার কিন্তু সেরকমই মনে হয়।কি বলেন? এরা হচ্ছে CO(Carbon monoxide)এর মতো নিরব ঘাতক।এদের হাত থেকে দেশকে অবিলম্বে রক্ষা করা না গেলে এদেশের আযুষ্কাল সর্বোচ্চ ৫০ বছর। So prevention is better than cure!

শিক্ষক লাঞ্ছনা কতটা যুক্তি যুক্ত?

ছবিঃ শ্যামল কান্তি ভক্তের উপর আরোপিত বর্বরতার চিত্র।

আমি বেশি কিছু লিখি না কারন আমি একজন সংখ্যালঘু মালু (মালাউন)। তবে গতকাল পত্রিকায় একটা সংবাদ দেখে খুবই মর্মাহত হয়েছি। তাই আর চুপ করে থাকতে পারলাম না। দেখলাম ছাত্রকে মারধর করা এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করার কথিত অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের কল্যান্দি এলাকায় পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে একটা কামরায় অবরুদ্ধ করে মারধোর করার পর নারায়ণগঞ্জের সাংসদ সেলিম ওসমানের উপস্থিতিতে কান ধরে উঠবস করিয়ে স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করা হয়। কান ধরে উঠবস করানো থেকে শুরু করে থানায় হস্তান্তর পর্যন্ত পুরো বিষয়টা তদারকি করেছেন সাংসদ সেলিম ওসমান নিজেই। হ্যাঁ এটা তিনি করতে পারেন কারন তিনি সরকার সমর্থিত বিরোধী দলের একজন প্রভাবশালী এমপি। তাছাড়া এতে এলাকাবাসীর সন্তষ্টিক্রমে রাজনৈতিক অঙ্গনে তার প্রভাব যথেষ্ট শক্ত হয়েছে বৈকি। কিন্তু এটা কতটা যুক্তি যুক্ত? একজন প্রবীন শিক্ষকের সম্মান হানি করার মধ্যে বস্তুত কতটুকু অর্জন আছে? হ্যাঁ অর্জন যেটুকু আছে সেটা হল-আমরা আরও একবার প্রমান করে দিলাম যে আমরা একটা মূর্খ,নোংরা,নির্লজ্জ্ব,বর্বর জাতি। এ বর্বরতা মধ্যযুগীয় বর্বরতার চেয়ে কম কিছু নয়। হ্যাঁ একজন শিক্ষক যদি অন্যায় করেও থাকে তবে তার জন্য দেশে প্রচলিত আইন আছে। সেই আইন মেনেই তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্হা নেওয়া যেত। আইনের উর্দ্ধে গিয়ে এধরনের একটা দুঃসাহসিক পদক্ষেপ কতটা যুক্তি নির্ভর? এখন ঐ শিক্ষক কি করবে? কি করে তার বাকি জীবন অতিবাহিত করবে? হয় আত্মহননের পথ বেছে নেবে নতুবা বেঁচে থাকার তাগিদে মনের দুঃখে দেশ ত্যাগ করবে। দেশ ত্যাগ করে নিশ্চয় সে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যাবে। এতে আমরা আসলে কতটা লাভবান হব? বাংলাদেশে ১৩.৫ কোটি মুসলিমের বসবাস আর ভারতে আছে পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭.৫ কোটি। এই একটা হিন্দু অপমানিত হয়ে ভারতে গিয়ে সেদেশের নিপিড়িত মুসলিমদের কি কমে ছাড়বে? নিশ্চয় তুর্কি নাচন নাচাবে আর প্রমোদউল্লাস করবে। তা হলে কি হল? তোমরা যার জন্য যা করছো তার জন্য তাই হল। তাই বলব সংঘাত এবং হিংসা কখনো স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। আসুন হিংসাকে পরিহার করে আমরা সবাই মিলে একসাথে শান্তিতে বসবাস করি। সীমা লঙ্ঘন না করে আন্যায়ের প্রতিবাদ করি। কারন ”অহিংসাই পরম ধর্ম”।