Total Pageviews

Monday, November 28, 2016

সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি রক্ষার্থে জাতিসংঘকে কার্যকর পদক্ষেপ এর মাধ্যমে এগিয়ে আসা উচিত।

সাধারন মানুষের অর্জিত ও গচ্ছিত সম্পদ হচ্ছে তাদের ঘর। তাদের নেই কোন ব্যাংক ব্যালেন্স। ঘরের মধ্যেই তাদের সুখ,দুঃখ,হাসি,কান্না সকল কিছুই নিহীত। আর এই ঘরই যদি পুড়িয়ে দেওয়া হয় তাহলে এরা যাবে কোথায়? রোহিঙ্গারা যেমন ঠেঁলা গুতো খেয়ে বাংলাদেশে আসছে,ঠিক একইভাবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা হতাশ হয়ে ইন্ডিয়া যাচ্ছে। দেশে দেশে মানবিকতার এত অবক্ষয় কেন? জাতিসংঘ ইচ্ছা করলে এই ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারে। জাতিসংঘ যদি এমন একটা আইন করে যে-যে দেশেই সাম্প্রদায়িক হামলা হবে সেই দেশে জাতিসংঘের সদস্য প্রত্যেকটি রাষ্ট্র অর্থনৈতিক অবরোধ করতে বাধ্য থাকবে। এরকম যদি করা যায় একমাসের মধ্যে সব টাইট হয়ে যাবে। সাগরে যেমন সকল ধরনের প্রাণী বসবাস করে সেখানকার ব্যালান্স ঠিক রাখে,তেমনি সকল সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে বসবাস না করলে একটি দেশের ব্যালান্স ঠিক রাখা সম্ভব হয় না। তাই এই সমস্যার সমাধানের জন্য জাতিসংঘকে কার্যকর পদক্ষেপ এর মাধ্যমে এগিয়ে আসা উচিত। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য যেমন ঝড় হয় তেমনি পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষার জন্য সত্যিই এরকম যুগান্তকারী কিছু করা দরকার।
#‌লি‌খে‌ছেন~প‌বিত্র ঘোষ।

Thursday, November 24, 2016

বন্ধ হোক রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচার,জয় হোক মানবতার!

চিত্রঃ রোহিঙ্গাদের উপর হামলার প্রতিবাদে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা।

আমি একজন মালু,একজন হিন্দু,একজন সংখ্যালঘু,সর্বোপরি একজন মানুষ। তাই একজন সংখ্যালঘু হিসেবে আরেকজন সংখ্যালঘুর উপর অত্যাচার দেখলে হৃদয় কেঁপে ওঠে। সংখ্যালঘু যেদেশেরই হোক না কেন তার একটাই পরিচয় সে সংখ্যালঘু,সে গুরুদের দ্বারা অত্যাচারিত। তাই আমি রোহিঙ্গাদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। এই ঘৃন্য অমানবিক অত্যাচার বন্ধ করা হোক। ধর্মের বেড়াজালে নিজেকে বন্দী না রেখে মানবতার দৌড়ে চাম্পিয়ান হোন। বেহেশতের সুখ এখানেই পাবেন। যদিও এদেশের বড় চাচারা আমাদের এতটাই জামাই আদর করেছেন যে ভেবেছিলাম কিছু লিখব না বা প্রতিবাদ করব না কিন্তু অবশেষে এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় আমার আত্মমানবতাকে বিষ্ফোরিত করেছে। তাই আর বসে থাকতে পারলাম না।

Monday, November 21, 2016

রোহিঙ্গা মুসলিমরা কেন মায়ানমারের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত?

চিত্রঃ রোহিঙ্গা বিদ্বেষী বৌদ্ধ ভিক্ষু।

আজ থেকে বেশ কয়েক দশক আগে মিয়ানমার যখন স্বাধীন হয় তখন মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিমদের নাগরিকত্ব দিতে চেয়েছিল কিন্তু রাখাইন রাজ্যটি মুসলিম অধ্যুষিত হওয়ায় তারা মিয়ানমার সরকারের এ প্রস্তাব মেনে নেয়নি, তারা চেয়েছিল পাকিস্তানের সাথে যোগ দিতে। পাকিস্তানের সাথে যোগ দেওয়ার জন্য তারা মিয়ানমার মুজাহিদ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলে। এসময় এরা রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের উপর অত্যাচার ও তাদের সম্পদ লুণ্ঠন করতে থাকে। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে একপর্য়ায়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচী ও অনশনের মত কার্যক্রম শুরু করে। মিয়ানমার সরকার অবস্থা বেগতিক দেখে সেনাবাহিনী ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে এবং তাতে সফলও হয়। এসময় মিয়ানমার মুজাহিদের বেশ কয়েকজন নেতা আত্মসমর্পণও করে। এভাবে বেশ কিছুদিন চলতে থাকল। অতপর বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময়ে অর্থাৎ সত্তরের দশকে এই মুজাহিদ গোষ্ঠি পুনারায় সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং এদের নেতৃত্ব দেয় পাকিস্তান মতাদর্শে বিশ্বাসী মুজাহিদ নেতা জাফর কাওয়াল। জাফর কাওয়ালের নেতৃত্বে সংগঠনটি ভালই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করায় তাদের ইচ্ছার গুড়ে বালি পড়ে। তাদের আর পাকিস্তানে যোগ দেওয়া হল না। এদিকে জাফর কাওয়ালকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী গ্রেফতার করে ও সাধারন মানুষের উপর জুলুম ও অত্যাচার করতে থাকে; এতে যোগ দেয় রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত বৌদ্ধরা। পরবর্তীতে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সরকারের কাছে নাগরিকত্ব চাইলে তারা তাদেরকে নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং তাদের সেনা সমর্থিত শাসকরা রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশী বলে চালিয়ে দেওয়ার ঘৃন্য অপচেষ্টা চালায়। এটাই হচ্ছে মূল সমস্যা। তবে যাই হোক তারা এখন সংখ্যালঘু মানে আমাদের জ্ঞাতি ভাই। তাদের একটাই পরিচয় তারা সংখ্যালঘু মানে অত্যাচারিত সুতরাং এদের পাশে আমাদের সকলকে দাঁড়ানো উচিত। জাতিসংঘের উচিত হবে তামাক না কেঁটে কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে এই হীন ট্রাজেডির সমাধান করা; সাথে সাথে আমাদের দিকেও জাতিসংঘ একটু সুনজর দিক। সত্যি বলছি আমার ভারত ভাল লাগে না, ভাল লাগে না কলকাতার সায়েন্স সিটি বা আগ্রার তাজমহল। আমার ভাল লাগে পড়ন্ত বিকালে জীর্ন শীর্ন কপোতাক্ষের তীর ঘেঁষে হেঁটে চলতে।

Saturday, November 19, 2016

সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী,রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি!

চিত্রঃ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

মানুষ উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করে মানুষ হওয়ার জন্য,অহংকারী বা শুধুমাত্র ভাল চাকরী করার জন্য নয় অথবা একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের একজন যেমন হিন্দু,মুসলিম বা বৌদ্ধ হওয়ার জন্য নয়। ছোট বেলায় যখন কোন শ্রদ্ধেয় ব্যাক্তি কাউকে আশির্বাদ করতেন তখন তিনি বলতেন- ’বাবা মানুষ হও’। কেউ কিন্তু বলতেন না তুমি একজন ভাল হিন্দু বা মুসলিম হও। কিন্তু আমরা যত বড় হচ্ছি ততই বড় বড় হিন্দু বা মুসলিম হচ্ছি। আমি দেখেছি বেশিরভাগ হিন্দুরাই পূর্বে যারা সেক্যুলার ছিল আজ কালের তান্ডবে পিষ্ট হয়ে দিনে দিনে তারা অসাম্প্রদায়িক হয়ে উঠছে; এর কারন হচ্ছে এদেশের সংখ্যগুরুরা হিন্দুদেরকে এতটাই জামাই আদর করছে যে তারা যথেষ্ট পরিমান অসাম্প্রদায়িক হতে পারছে না। আমি নিজেও একজন সেক্যুলার ছিলাম, এ দেশকে নিজের মনে করতাম কিন্তু এখন আর সেরকম মনে করি না,কারণ আমি জানি যখন তখন আমাকেও চলে যেতে হতে  পারে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর হামলার ঘটনায় আমাদের হৃদয় ডুকরে কেঁদে ওঠে কিন্তু এদেশে হিন্দু বা সাঁওতাল পল্লীতে হামলা হলে আমরা প্রতিবাদের ভাষা ভূলে যায়। রোহিঙ্গা বা এদেশের হিন্দু বা সাঁওতালদের মধ্যে বস্তুত কোন পার্থক্য আছে কি? আজ মিয়ানমারে যারা সংখ্যালঘু এদেশে তারা সংখ্যাগুরুর আসনে অধিষ্ঠিত,এদেশে যারা লঘু সীমান্ত পেরোলেই তারা গুরু। তাই বলব মানুষকে শুধু মানুষ হিসেবেই বিবেচনা করা উচিত,অন্য কোনভাবে নয়। একজন মানুষ হিসেবে মানুষের উচিত অন্য অত্যাচারিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। বিবেককে ধর্মের বেড়াজালে আঁটকিয়ে রাখা ঠিক নয়। একজন প্রোগ্রেসিভ মানুষ হওয়ার জন্য ধর্ম গ্রন্থ পড়ার খুব বেশি প্রয়োজন হয় না কারন মানুষ হওয়ার জন্য পৃথিবীতে আরও অনেক বই আছে যেগুলো আসলে খুবই ফলপ্রসূ। যেমন-ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি এ,পি,জে আব্দুল কালামের ’মাই জার্নি’ বইটা পড়তে পারেন, আমি মনে করি এটি আপনাকে ভাল একজন মানুষ হতে সহায়তা করবে। এতো আমি একটি বইয়ের কথা উল্লেখ করলাম এরকম হাজার হজার ভাল গ্রন্থ আছে যেগুলো আসলেই অন্য যেকোন ধর্মীয় গ্রন্থের চেয়ে অনেক ভাল। আপনি যত বেশি বেশি ধর্ম গ্রন্থ পড়বেন বা চর্চা করবেন আপনি তত বেশি বেশি সাম্প্রদায়িক অথবা অমানুষ হবেন। শুধু মাত্র ঐ বিশেষ গ্রন্থ নিয়ে পড়ে থাকলে আপনি শুধু একজন হিন্দু বা মুসলিম অথবা বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান হবেন,মানুষ হতে পারবেন না। পৃথিবী থেকে যখন বিদায় নেবেন তখন মানুষ হিসেবে নয়,বিদায় নেবেন ঐ লেবেলটা নিয়ে। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন-’সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি’। রবীন্দ্রনাথের উক্তিটি আজও নির্বাক সত্য। এই বাস্তবতা থেকে আমরা আজও বের হতে পারিনি, জানিনা ভবিষ্যতেও পারব কিনা!