Total Pageviews

Sunday, November 6, 2016

”মালাউন” শব্দের অপপ্রয়োগ ও এদেশের হিন্দু।

মালাউন শব্দটি বাংলাদেশে মূলত: বাঙালি হিন্দুদের উপর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এইটাকে গালি ভাবার তেমন কোন কারন নেই। এটা মনে রাখা দরকার হিন্দুরা খুবই বিনয়ী এবং ভদ্র একটি জাতি। এরা নিজেরা পরিশ্রম করে খায়,অন্যের সাহায্যপ্রার্থী না হয়ে। এরা নিজেদের ধর্মের প্রতি যেমন আত্মবিশ্বাসী তেমনি অন্যের ধর্মের প্রতিও যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল। ধর্মকে ব্যবহার করে জ্বালাও পোড়াও তো পড়ে মরুক, একটা গালি পর্যন্ত দিতে এরা কুন্ঠাবোধ করে। যাই হোক যা বলছিলাম; সেটা হল-মালাউন শব্দটি মুলত আরবী শব্দ ملعون থেকে উদ্ভূত যার অর্থ অভিশপ্ত বা আল্লাহর অভিশাপপ্রাপ্ত। ১৯৪৬ সালে নির্মলকুমার বসু মোহনদাস গান্ধীর সঙ্গে নোয়াখালিতে সেবামূলক কাজ করতে আসেন। তিনি লক্ষ্য করেন হিন্দুদের মালাউন বলে গালি দেওয়ার রীতি। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ গণহত্যা চলাকালীন পাকিস্তানি সেনারা বিশিষ্ট বাঙালি হিন্দু অধ্যাপক ড: গোবিন্দচন্দ্র দেবকে হত্যা করে। হত্যা করার পূর্বে তাঁকে মালাউন বলে সম্বোধন করে পাকি সেনারা। ১৩ই এপ্রিল সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী নিজে আর এক বিশিষ্ট বাঙালি হিন্দু দানবীর নূতনচন্দ্র সিংহকে নিজে গুলি করে হত্যা করেন। উপস্থিত মুসলমানরা নূতনচন্দ্র সিংহের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করলে তাদের ভর্ৎসনা করে তিনি বলেন, সামান্য একটা মালাউনের মৃত্যুতে এত শোক প্রকাশ করার কি আছে! অবশ্য শেষ পর্যন্ত তার ফাঁসি হয়েছে। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সন্ত্রাসীদের হাতে মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর এবং হিন্দু বাড়ি লুট হবার প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক বলেছেন, "মালাউনের বাচ্চারা বেশী বাড়াবাড়ি করছে"। এই আওয়াকে ৬০.৫ বার নাকে খত দিয়ে মন্ত্রীসভা থেকে বের করে দিলেই আমরা খুশি। কারন আমাদের ভোটও তো ওই গন্য মান্য জঘন্য ব্যক্তির থলেতে বিদ্যমান।

No comments:

Post a Comment